28/05/2022
মুসলিম হিসাবে নাস্তিক দের করা এই প্রশ্নের উত্তর আপনার জানা আছে কি ?
সৃষ্টিকর্তা যেহেতু পরম দয়ালু , তাহলে তিনি জাহান্নাম সৃষ্টি করেছেন কেন ?
=) সৃষ্টিকর্তা যেমন পরপম দয়ালু , ক্ষমাশীল । ঠিক তেমনি তিনি একজন ন্যায়বিচারক ।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের একটা স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।
সাথে পাঠিয়েছেন একটা গাইডবুক। জাকে আমরা বলি কুরআন। এখন এই স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করেই আমরা তার দেখানো পথে চলবো , নাকি চলবো না। যদি চলি , তাহলে আমরা জান্নাতে যাবো ।
মোটকথা , আমরা কোথায় যাবো তা আমরাই নির্ধারণ করি আমাদের কর্মের মাধ্যমে ।
“ এখানে প্রশ্ন আসতে পারে যে , সৃষ্টিকর্তা তো আমাদের ভাগ্য আগেই লিখে রেখেছেন ।”
=) মূলত সৃষ্টিকর্তা আমাদের কর্মের ব্যাপারে “ওয়াকিফহাল” মানে অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞানসম্পন্ন । তিনি সর্বজ্ঞাত । তিনি আলিমুল গায়েব। তাই তিনি আগ থেকে জানেন বলেই তা আমাদের ভাগ্যলিপি হিসেবে লিখে রেখেছেন।
“এখন প্রশ্ন হতে পারে যে , কিছু লোক স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে জাহান্নাম বেঁছে নিচ্ছে ।”
উদাহারনসরূপ,
ধরো , তুমি গভীর সাগরে জাহাজ থেকে পানিতে পরে গেলে । একটু পরেই সাগরের অতলে তলিয়ে যাবে । এখন ধরো তোমাকে উদ্ধার করার জন্য আমি এক্লটি লাইফ জ্যাকেট তোমার দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
সেই মুহূর্তে তোমার কাছে দুটো অপশন । হয় লাইফ জ্যাকেটটি নিয়ে প্রাণ বাঁচাবে , নয়তো ডিনাই করে সাগরে তলিয়ে যাবে এবং মৃত্যুবরন করবে ।
এখানে খেয়াল করো, আমি কিন্তু বাঁচার উপকরণ তোমাকে দিয়েছি । এখন তুমি তোমার স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগ করে হয় বাঁচবে না হয় ডিনাই করে মারা যাবে। সেটা সম্পূর্ণ তোমার ব্যাপার।
ঠিক তেমনি ভাবেই, সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য উপকরণ বা পথ দিয়ে রেখেছেন । সাথে আমাদের ইচ্ছাশক্তি ও । এখন আমরা তা আঁকড়ে ধরে বাঁচবো , নাকি উপেক্ষা করে মরবো , তা আমাদের উপর নির্ভর করছে ।
“সৃষ্টিকর্তা কারোর উপর বিন্দু পরিমান যুলুম করেন না। তিনি যেমন পরম দয়ালু, ঠিক তেমনি একজন ন্যায়বিচারক।”
কুরআন আয়াত , “নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের প্রতি কোনো যুলুম করেন না , বরং মানুষ নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করছে ।” (সূরা- ইউনুস, আয়াত ৪৪)
এখন কিছু লোক নামাজ-কালাম পড়ে না , মিথ্যা কথা বলে না, লোক ঠকায় না, চুরি-রাহাজানি করে না , মোটকথা সকল প্রকার অন্যায় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখে, কেবল স্রষ্টার সন্নিধ লাভ করে জান্নাত লাভের জন্য
অপরদিকে , আরেকদল লোক এসবের কোনটাই কেয়ার না করে ভোগবিলাসে মেতে উঠে, সকল অন্যায় কাজ করে, আল্লাহর অবাধ্য হয়।
তাহলে আল্লাহ যদি দয়াপরাশ হয়ে তাদেরকে আগের দলের সাথে জান্নাতে পাথিয়ে দেন, তাহলে এটা কি ন্যায় বিচার হলো?
তাহলে প্রথম দল বলবে তাদেরকে ঠকানো হলো। আর দ্বিতীয় দলের সকল অন্যায়কে মেনে নেওয়া হলো।
এজন্যই আল্লাহ জান্নাত আর জাহান্নাম দুটোই তৈরি করে রেখেছেন । আর আমাদের কর্মফলই নির্ধারণ করে দেবে আমাদের গন্তব্যস্থল । এতে কারো সাথে চুল পরিমাণ ও অন্যায় হবে না ।
এজন্যই,মহান আল্লাহ তায়ালা যেভাবে একজন পরম দয়ালু , ক্ষমাশীল , ঠিক তেমনি ভাবে একজন ন্যায়বিচারক ।